এক বাংলাদেশী বিজ্ঞানীকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলছে তোলপাড়। মূল ধারার বিভিন্ন মিডিয়াতে এখন তাকে নিয়েই আলোচনা-পর্যালোচনা। এ সময়ের প্রত্যাশিত সর্বশেষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন তিনি। এই বাংলাদেশী বিজ্ঞানীর নাম ড. আনিসুর রহমান। তিনি বর্তমানে পেনসিলভানিয়ার হেরিসবার্গের বাসিন্দা। বিশ্বের বিভিন্ন এয়ারপোর্টসহ নিরাপত্তা এলাকাগুলোতে যখন দেহ তল্লাশি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক, তখন তিনি আবিষ্কার করেছেন একটি বিস্ময়কার প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে যেকোনো মানুষের শরীরে বিস্ফোরকের যেকোনো উপাদান থাকলে সেটি এমনিতেই ধরা পড়বে। এ জন্য বর্তমানের এক্সরে মেশিনের প্রয়োজন হবে না।ড. আনিসুর রহমানের এই প্রযুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ ইতোমধ্যেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ আরো বিস্তারিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কিছু নমুনা দিয়েছে ড. আনিসের কাছে। তারা সেগুলো এখন বিচার-বিশ্লেষণ করছেন। এনবিসি টেলিভিশন ড. আনিসের এই উদ্ভাবন নিয়ে ইতোমধ্যেই বড় ধরনের খবর প্রচার করেছে। পেনসিলভানিয়ার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিকস মিডিয়া ড. আনিসের এই আবিষ্কার বিষয়ে রিপোর্ট করতে ব্যাপক আগ্রহী বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ড. আনিসুর রহমান বলেন, বর্তমান সময়ে সিকিউরিটি এক বিরাট ইস্যু। এটিকে নিশ্চিত করতে গিয়ে সারা বিশ্বে বিলিয়নস অব ডলার খরচ করা হচ্ছে। মেটালিক কোনো বিস্ফোরক হলে সেটি যেকোনো জায়গাতেই ধরা পড়ে যায়। কিন্তু এখন বিভিন্ন কেমিক্যাল পাউডারসহ রাসায়নিক বিস্ফোরকের প্রাদুর্ভাব ও ব্যবহার দিন দিনই বাড়ছে। গত ক্রিসমাসে ডেল্টা এয়ারলাইন্সে নাইজেরিয়ার এক সন্ত্রাসীর কাছে আন্ডার ওয়্যারে পাউডারজাতীয় বিস্ফোরক পাওয়া গেছে। অল্পের জন্য ভয়াবহ বিস্ফোরণ থেকে বেঁচে গেছে শত শত যাত্রী। তার পর ইউরোপের বিভিন্ন এয়ারপোর্টে বিশেষ করে প্যাকেটের মধ্যে বিস্ফোরক পাউডার পাঠানোর সাম্প্রতিক ঘটনা সবাই জানেন। এ অবস্খায় কী করা যায় তা নিয়ে ব্যাপক গবেষণার পর আমরা একটি নতুন মেশিন আবিষ্কার করেছি। এই মেশিনে যাতে কোনো ভুল সিগন্যাল এবং সন্ত্রাসীরা সিগন্যালকে লুকাতে না পারে সে জন্য বিশেষ ধরনের প্রযুক্তিগত কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের এই যন্ত্রের দাম হচ্ছে প্রায় আড়াই লাখ ডলার। ভবিষ্যতে হয়তো এর দাম আরো কমবে। এই মেশিন একটি টেবিলে বসানো সম্ভব। এর ফলে যে কেউ কোনো ধরনের রাসায়নিক বিস্ফোরক নিয়ে নিরাপত্তা এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না। এই মেশিনের সিগন্যালকে উপেক্ষা করার কোনো পথ নেই। মেশিনটির নাম হচ্ছে স্পেকট্রোমিটার। এর আরো অনেক প্রয়োগ আছে। এর মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে এটি একটি সফল যন্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। তিনি বলেন, বেশি বা খুবই অল্প বিস্ফোরক হলেও স্পেকট্রোমিটারের চোখ এড়ানো সম্ভব হবে না। এটি নিয়ে এখনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। তিনি বলেন, নিউজার্সির একটি কোম্পানির বিনিময়ে এই প্রযুক্তি ইতোমধ্যেই সৌদি আরব, ভারতসহ যুক্তরাষ্ট্রের বìধু রাষ্ট্রগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। এখন আরো বিভিন্ন দেশ এ নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে। তবে রাশিয়া, ইরানসহ যুক্তরাষ্ট্রের বìধু তালিকায় নয়, এমন কোনো দেশের কাছে এই প্রযুক্তি বিক্রি করা যাবে না। ড. আনিসুর রহমানের বাড়ি বাংলাদেশের পাবনায়। দেশে অবস্খানকালে তিনি ছিলেন বিশিষ্ট আণবিক বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়া ও ড. শমসের আলীর অন্যতম ঘনিষ্ঠ সহচর। বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনে তিনি ছিলেন সাইন্টিফিক অফিসার। যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনে অবস্খিত মার্কেট ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি লাভের পর পেনসিলভানিয়ার অ্যাপ্লাইড রিচার্স ফটোনিক্স কোম্পানির সিইও হিসেবে যোগদান করেন তিনি। |
0 comments:
Post a Comment