Total Pageviews

Sunday, June 12, 2011

মুসা তার স্বপ্ন পূরণ করেছে


undefined
২০০৬ সালের শুরু তখন। মুসা ইব্রাহীম সবেমাত্র নেপালের একটি পর্বতারোহণ করে এসেছে। তখন তার সঙ্গে আমার টুকটাক কথাবার্তা হয়। একদিন পর্বতে ওঠার নানারকম ছবি দেখাল। ছবি দেখতে দেখতে কথা হচ্ছিল। তখনই দেখেছি ওর অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে পাহাড় আর এভারেস্ট।
ওর স্বপ্ন ছিল এভারেস্ট জয় করার। নিজের স্বপ্ন সে পূরণ করবেই। ফেসবুকে ও লিখেছে, ‘আমি যদি লক্ষ্য স্থির করি যে কিছু একটা করব, মনে রেখো, আমি সেটা যেকোনো উপায়েই করে ছাড়ব।’ ফেসবুকে নিজের সম্পর্কে যা বলেছে, ও তো তাই-ই। পাহাড়ের টানেই পেশাজীবনকেও সে দূরে সরিয়ে রেখেছে। এমন কোনো পেশায় জড়ায়নি, যাতে ওর পাহাড়ে যেতে অসুবিধা হয়।
নর্থ আলপাইন ক্লাব গঠন করল। ঘোষণা দিল ‘ভিশন ২০১০: মিশন এভারেস্ট’। অন্নপূর্ণা-৪ জয়ের পর ওর আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গেল। এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রবলভাবে শুরু হলো এভারেস্টে যাওয়ার প্রস্তুতি। মার্চের শেষের দিকে একবার ঢাকায় গিয়ে দেখলাম, মুসার মুখ একেবারে কালো। টাকার সংস্থান হচ্ছে না। যাওয়া হবে কি না, তা অনিশ্চিত। ময়মনসিংহ ফিরে আসার পর ৪ এপ্রিল ও জানাল, ‘চলে আসো। বৃহস্পতিবার যাচ্ছি।’
পাহাড় মুসার অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে গেছে। ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে আমাদের বিয়ের কয়েক মাস পরই চুলু পর্বতে গেল ও। একা একা থাকতে হতো। এমন কষ্ট মেনে নিয়েছি, ওর অদম্য আগ্রহ দেখে। পর্বতারোহণ ঝুঁকির কাজ। প্রিয়জনকে এমন কাজে যেতে দিতে মন সায় দেয় না। কিন্তু এভারেস্ট জয় যে ছিল ওর স্বপ্ন, ওর অস্তিত্ব—এটা থেকে ওকে আলাদা করে ফেললে মুসা আর মুসার মতো থাকত না। মুসা নিজের স্বপ্ন নিজেই পূরণ করেছে।

0 comments:

Post a Comment

 
Design by Wordpress Theme | Bloggerized by Free Blogger Templates | JCPenney Coupons